অটোয়া, শনিবার ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
পাভেল আমানের তিনটি কবিতা

১) আবেগের সজীবতা

লাগামছাড়া আবেগে
জুড়েছি বোহেমিয়ান ভাবনা
বিস্তৃত আকাশে
ভাসমান চেতনার বর্ণমালা
একে একে জেগে উঠছে
সৃষ্টি সুখের উল্লাস
ছকে বাঁধা চৌহদ্দি পার করে
তিলে তিলে বিনির্মিত
ভালোলাগার দিনযাপন
পার্থিব মোহ শূন্যতায়
শুধুই নান্দনিক জীবনের স্পন্দন
অনায়াস মুগ্ধতার বন্ধনে
দীর্ঘ কসরতে খুঁজে নিয়েছি
বাঁচার পূর্ণতা।
যেখানে আবেগের সজীবতা
মিলেমিশে একাকার
যাপিত জীবনের চরিত কথায়।

২) অস্থিরতার চাদর 

স্থিরতার চাদরে আবৃত 
দেহ-মন-প্রাণ 
জীবন ঘুড়ি লাঠাইয়ের সুতো ছিঁড়ে 
নিরুদ্দেশের ঠিকানায়,
ধরণীর কোনায় কোনায় জমে গেছে 
জঞ্জালের বিশালাকায় স্তুপ 
পরিবেশের স্নিগ্ধতায় ঘনীভূত 
মহা দূষণের নিগূঢ় কুয়াশা।
সবকিছুতে নিরন্তর ভর করছে 
বিপর্যয়ের নিদারুণ সহবস্থান 
জীবনের সহজাত স্বাভাবিকতা 
শঙ্কার করাল গ্রাসে সহসা দমবন্ধ
চারিদিকে বিপদ ঘন্টার তীব্র নিনাদ!
অনুভূতির নান্দনিক স্পন্দন 
ভয়ের দাপটে ছন্দহীন 
সাজানো জীবন খাঁচা বন্দি পাখি।
দুর্বার সঙ্কটের মায়াবী জাল 
গ্রাস করছে ভারসাম্যের সুস্থতা, 
নিমেষেই বানভাসি বাঁচার অধিকার 
অস্থিরতার নিকষ আঁধারে-
মনুষ্য প্রাণ নিরাশার আতান্তরে 
তবুও দপ করে নিভানোর পূর্বে 
আবারো আঁকড়ে ধরার স্বপ্নে বুঁদ
মনোবলের পুনরুজ্জীবনে- 
ঝেড়ে ফেলে অস্থিরতার ভারী চাদর।

৩) সম্মিলিত মানবতা

ত্মকেন্দ্রিকতা খোলস ছেড়ে বেরিয়ে
বিবেক চেতনার দর্পণে
নিজেকে পুনরায় নিরীক্ষণ করো
জাগ্রত মনুষ্য বোধে
খুঁজে পাবে অন্তঃস্থ গুণাবলী
যথার্থ মানবিক উন্মেষে
ঝরে পড়বে স্বার্থ লাভের বাসনা
তিলে তিলে সৃষ্টি হবে
নিবেদিতপ্রাণ মানসিকতা
অহর্নিশ প্রসারিত দৃষ্টিতে
পরিপূর্ণ ব্যক্তিত্বের মহানুভবতায়
ছড়িয়ে পড়ুক মনুষ্যত্বের সৌরভ
দ্বেষ, দ্বান্দ্বিকতা, অস্থিরতার বিলীনে
গড়ে তুলি পারস্পরিক মানবতার ঐক্য
অসময়ের অমোঘ বার্তা প্রদানে
ভুলে যাই স্বতন্ত্র ভাবনার পরিসর
নির্দ্বিধায় বাড়িয়ে দিই
সহযোগিতার প্রত্যয়ী হাত
যেখানে শুধুই সম্মিলিত মানবতা।

পাভেল আমান
হরিহরপাড়া
মুর্শিদাবাদ