কিশোরী লীমার আর্তি - মৃণাল চৌধুরী সৈকত
আমারে আর মাইরেন না
আমি মইরা যামু আন্টি
আমারে ছাইড়া দেইন
আমি বাড়ি চইল্যা যামুগা।
আল্লার দোহাই লাগে
টেহা কয়ডা দেয়া দেইন,
আমি আম্মা-আব্বার কাছে
আইজি চইল্যা যামু,
আর মাইরেন না।
হায় আল্লাহ-
তুমি আমারে ওগর হাত থাইকা
বাঁচাইয়া রাইখো মাবুদ,
তা না অইলে-ওরা যে
আমারে মাইরা ফালাইবো।
ওরা মানুষ না!
টেহা চাইলেই-ওরা আমারে
রাস্তার কুকুরের লাহান
আইরন, খুন্তি গরম কইরা,
মাথা-শরীর আর আমার
লজ্জা স্থানে ছ্যাঁকা দেয়,
চরম যন্ত্রণা ! ওহ !!
আন্টি, আন্টির ছেলে-মেয়ে
আর কাজের মাইয়াডা
হগলে মিইল্যা-
আইরনের ছ্যাঁকা দেয়
সব জায়গাতেই ছ্যাঁকা দেয়।
আমার মাথার চারহানে-ওরা
খুন্তি দিয়া বাইরাইছে,
আমার মুখ চাইপ্যা ধইরা
জোড়ে, খুব জোড়ে মাইরছে!
না খাওয়াইয়া রাইখছে-
লোহার রড দিয়া বাইরাইছে,
আর ঘরের মাইজ হানে
পাক্কার উপর হাত রাইখা
পায়ে পারা দিয়া ধইরা-
ইচ্ছা মতো বাইরাইছে।
প্লাস দিয়া আমার হাতের নখ
উঠাইয়া ফালাইছে-
দাঁত তুইলা নিছে,
মাথার চুল কাইট্যা দিছে।
আমি টেহা চাইলেই
ওরা মারছে ! খুব মারছে !!
মারতে মারতে ওরা আমারে
অজ্ঞান কইরা ফালাইছে। একটু পানি চাইলেই-
পাষানেরা-পানি না দিয়া
চুলের মুডি ধইরা কইতো,
তুই মরতে চাস তো ?
তাইলে মর, তুই মরলে
তরে বস্তায় বইরা-
বুড়ি গঙ্গায় ফালাইয়া আসুম,
কেউ টের পাইবো না।
এইসব কইতে কইতে
ওরা সবাই মিইলা-আমার
হাত-পা-চোখ-মুখ বাইনধ্যা
ময়লাযুক্ত পোকা মাঁকড়ের লগে
অন্ধকার ঘরে-
কখনো আবার বাথরুমে
ফালাইয়া রাইখছে, ওহ্।
রোজার মাস পুরাডাই
ওরা আমারে অত্যাচার করছে,
সেহেরি না খাইয়াও আমি
প্রত্যেক দিন রোজা রাখছি-
আবার পিটনাও খাইছি।
ওরা আমারে ঠিকমত
খাইতেও দেয় নাই !
জ্বর-জ্বালা-যন্ত্রনা-লইয়া
কাজ করতে অইছে,
না করলেই অত্যাচার-নিয্যাতন !
এইসবের পর-
বাইচ্চ্যা থাহনের ইচ্ছা
হারাইয়া ফালাইছি-আহ !
আমি আহনের দিনও-
আন্টি লোআর রড দিয়া
আমার মাথায় বাড়ি মারছে,
এই ভাবে মারতাছুইন ক্যান ?
জিগাইতেই কইলো-
তোর বাড়ি না যাওয়ার
ব্যবস্থা করতাছি।
বাড়ি যাবি না ?
আপনাগর কাছে বিচার চাই-
ওগর অত্যাচারের বিচার,
আমারে ছ্যাঁকা দেওনের বিচার।
আমার জীবনডারে
নষ্ট কইরা দেওনের-বিচার।
ওইসব, শিক্ষিত-ধনী
মানুষ রুপি অত্যাচারী
হিংস্র জানোয়ার গুলার
কঠিন বিচার।
মৃণাল চৌধুরী সৈকত । টঈী-গাজীপুর
-
ছড়া ও কবিতা
-
23-01-2020
-
-