অটোয়া, সোমবার ২৩ জুন, ২০২৫
দু’টি কবিতা - মহসীন বখত

বিষন্ন পদাবলি

বিষন্ন রনপায় এসেছি আদিগন্ত হেঁটে। সঙ্গী করেছি রাগিণী সূর্যাস্তের 
হলুদিয়া সর্ষেক্ষেত গায় মাখিয়ে কত কতকাল তোমার অপেক্ষায় থাকি।
আমার ছায়া দলে কে যাও বিহঙ্গ ডাহুকী? তুমি বুঝি মামুন হুসাইনের
গল্পে গেঁয়ো কুলবালা আমারই বেদনার আহাজারী গেয়ে বিবাগী একাকী
প্রতিদিন আনবাড়ী যাও। এদেশে আকুল কীর্তনিয়া আর গায়না তোমাকে। 
মাঝরাতে শীৎকারে কাঁপেনা নৈশ-পতঙ্গ, চারদিকে ধর্ষণের চিৎকার
সাইবার যোদ্ধাগুলো পিপিলিকার আদলে মার্চ করে যেন সতর্ক কুকুর
এনিম্যাল ফার্মের নরক গুলজারে মেতে ওঠে তারা স্বর্গমর্ত্য অন্তরীক্ষে।

ধলপ্রহরে দলিত তনু পড়ে থাকে স্খলিত বসনে হরিদ্রাভ সর্ষেক্ষেতে
ততক্ষণে তোমার পলকহীন মৃত আঁখিপটে আদর কাড়ে মধুমক্ষিকা
চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে ব্যবিচারের সাতকাহন, গল্পের অলিক শাখা
জনারণ্যে গিরিকন্দর মাড়িয়ে আকুলি বিকুলি রহস্যজাল বুনতে মাতে।

গৃহকপোতের গল্পগুলো থেমে গেছে। কোথাও বাজেনা তোমার ডাকনামের
তানে বাঁশরীয়া। এদেশে কোনো কীর্তনিয়া গায়না প্রাণাবেগে গান বিরহের।

কল্পতরু 

মোড়কের ভাঁজে ভাঁজে গুটিয়ে ছিলাম
মাতৃটজঠরে ঘুমিয়ে ছিলাম ব্যাকুল
ধ্রৌপদীর শাড়ির কুচিতে লুকিয়ে ছিলাম
এককোষ এক প্রাণ নিঃসঙ্গ প্রোজ্জ্বল।

আমাকে খুলতে খুলতে খুলতে 
এতদূর বিছিয়ে দিলে জোছনা
শিমুল তুলোর মত ধুনতে ধুনতে
মেঘে মেঘে ভাসিয়ে দিলে বেদনা।

ছিলাম নিধুবনে একাকী
শিশিরাদ্র ঘাসে ফুটেছিলাম
যুবতীর স্তনে নহর বইছিলাম
বৃক্ষশাখে উড়ে উড়ে পাখি।

মিথ্যে স্বপ্ন মুঠোয় ধরেছি 
পায়ের তলায় নম্র শিশির
রোদ মেখে মুছে দিয়েছি
মৃত্তিকায় ফুটেছি অংকুর।

আমি এক অলিক কল্পনা
মেঘে মেঘে নদী কলকল
আদতে কল্পতরু বৃক্ষ-বল্কল
আমি তন্দ্রার বাসনা।

মহসীন বখত
অটোয়া, কানাডা।