অটোয়া, সোমবার ২৩ জুন, ২০২৫
নির্মল কুমার প্রধান এর দুইটি কবিতা

১) দুঃসময়
বুড়ির বুড়ো আজ নেই --
দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল জীর্ণ অশত্থ গাছটা
সেঞ্চুরি পেরোবার পথে কত ঘটনার সাক্ষী, 
পিঙ্গল আকাশে ফটিক জল চেয়ে
তৃষ্ণার্ত চাতকদের আনাগোনা --তবু বৃষ্টি কই?

ঝুরি দোলানো জট পাকানো বটগাছটা
কোমরের জোর হারিয়ে আনত
শ্যেনপাখিটা ছোঁ মারতে নেমে আসে মাটিতে 
তপ্ত দুপুর হাঁফ ছাড়ে হাট করা জানালায়।

নদীটা মরা জোয়ার বয়ে চলে
মরা চাঁদ মর্মের কথা বলতে বলতে জাগে
বিপন্ন সময় তার ছিন্ন বীণা বাজিয়ে চলে
পশলাতে মাতে রিক্ততার মেঘ- বৃষ্টি, 
দুঃসময়ের কালো ছায়া জাল পেতেছে সর্বত্র।

২) ভরা কোটাল
কূল ভাঙা জলোচ্ছ্বাস 
ডুবিয়ে দেয় মাঠ-ঘাট-পথ-প্রান্তর
উঁচু-নীচু একাকার হয় প্লাবন হিল্লোলে
---যখন আসে ভরা কোটাল। 

নদীতে জোয়ার এলে ---
ডুবে যায় তট, বিস্তৃত পট রূপ নদী চর
পাড় ভাঙা ঢেউ -দোল উজানে, 
মাটির স্তরে জমে ওঠে পলি-প্রেম। 

আধ্যাত্ম - প্রকৃতির নদে চরে
দোলায়িত গম্ভীর গৌর - সাগর, 
কৃষ্ণ -সাগর রাধা-সাগর একাকার হ'য়ে 
এনেছে প্রেমের অহৈতুকী প্লাবন ---
যা কলি জীবের অনাহূত প্রাপ্তি।

এ কলিযুগ তাই পুষ্পবন্ত
গৌর কৃপায় ধন্য, গৌর রসে রসায়িত, 
উন্নত উজ্বল রসে পরিপূর্ণ, 
কলি জীবের অনর্পিত ধন পাওয়ার জন্য
এক উপযুক্ত সময়, সাধ্য-সাধন তত্ত্বের 
ফসল উৎপাদনের ঈপ্সিত ভরা কোটাল।

নির্মল কুমার প্রধান
দক্ষিণ ২৪ পরগণা, পশ্চিমবঙ্গ