অটোয়া, সোমবার ২৩ জুন, ২০২৫
ডঃ গৌতম সরকারের তিনটি কবিতা

আজ কান্না আসার দিন 
কিছু কিছু বিষাদ রাখা যায় কাগজে মুড়ে 
কিছু কিছু হতাশা, দীর্ঘশ্বাস, ফিকে হয়ে 
আসে সময়ের পরিচর্যায়,
তবু কিছু কিছু কান্না রয়ে যায় শরীরের অন্ধকারে৷

হৃদয় নিংড়ে সন্ধ্যা নামে৷
বৃষ্টি পড়ে,  রক্ত বৃষ্টি পড়ে অন্তরের গভীরে৷৷

সময়ের স্রোতে হারিয়ে যায় অসার মুহূর্ত,
অন্তরে বাহিরে সে কি অসহ্য দাবানল!
অন্তহীন, গার্হ্যস্থ গভীরে অমলিন৷

আজ সেই কান্না আসার দিন, রৌদ্রকরোজ্জ্বল 
আকাশে বা আবহাওয়া অফিসে 
বৃষ্টির কোনো খবর নেই;

কিন্তু আমি জানি, সে আসছে 
নিঃশব্দে, নির্লিপ্ত পদচারণায়, 
শুধু নাড়িয়ে দিয়ে যাবে সময়ের 
যতিহীন অসম্ভব দ্রুততাকে৷৷ 

বৃষ্টি ভেজা দুপুরবেলা
রের মধ্যে ঢুকে পড়েছে মেঘ, 
দাপুটে মেঘের উলঙ্গ স্পর্শে 
এই চৈতি সকালে 
লজ্জায় ঢল ঢল আমার 
একফালি বারান্দা৷

পশ্চিম আকাশে এখনও
জোনাকির রাত,
অনুমেয় উষ্ণতায় ভরে যাচ্ছে 
সারা শরীর,
বাসি বিছানার তেলগন্ধ 
মিশে যাচ্ছে ভোরের শিশিরের 
মাটিগন্ধে৷

একবার ছেলেবেলায় ভোর রাতে 
শিউলি কুড়োতে কুড়োতে 
হাতে পেয়েছিলাম শিশিরের স্পর্শ,
সব লজ্জাকে ম্লান করে দিয়ে 
সারা গায়ে মেখেছিলাম 
সেই শীতল উষ্ণতা৷

আজ মেঘহীন আকাশ, তবু আজ 
বৃষ্টি আসার দিন, 
সারা আকাশ কাঁপিয়ে বৃষ্টি আসবে 
নগ্ন নির্জন দুপুরবেলা 
অপেক্ষা শুধু৷

প্রত্যাশা ভেসে যায়
জ আর আমি বাড়ি ফিরবো না 
হাতের কাছে নদী 
মাথার ওপর চাঁদ 
তোমার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম 
শুকিয়ে মরুভূমি হয়ে যাচ্ছে৷

শেষ রাতের তুমুল সানাইয়ের সুরে 
রাঙা চেলি জামদানি বেনারসির 
অসহ্য পাশ ফেরার শব্দ--অনিন্দ্যকান্তি 
পুরুষের গাঁটছড়া হয়ে বাঁধা পড়েছে 
আমার আকাশ---

আজ সমস্ত রাত জুড়ে তুমুল বর্ষার 
সুরে মল্লার হয়ে ভেসে যাবো.....
মাথার ওপর পঞ্চমীর চাঁদ 
হাতের কাছে শ্যামলী নদী 
আমার ঊষর প্রত্যঙ্গ --আজ 
সারা শরীরে মাতিয়ে তুলবে 
সহস্র বেবাক যন্ত্রণা৷

ডঃ গৌতম সরকারের
কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ