অটোয়া, সোমবার ২৩ জুন, ২০২৫
রহস্যের মায়াজাল (বারো) - সুজিত বসাক

ই সেই অন্ধকার ঘর যেখানে রাকিবকে বন্দি করে রেখেছিল ওরা। রাকিব টর্চের আলোয় পরীক্ষা করতে লাগল চারপাশ। শুভ্রাজিতা উতলা হয়ে বলল — এখানেই কী ত্রিনয়ণ রহস্যের সন্ধান মিলবে?
হাসল রাকিব — অত সহজেই কী সবকিছু পাওয়া যায় রাজকুমারী ? এখানে আমি অন্য কিছুর সন্ধান করছি।
—কীসের?
—একটা ছবি। এক ঝলকের জন্য সেদিন দেখেছিলাম। সম্ভবত এই ঘরেই। তখন বুঝতে পারিনি, এখন আমার ছবিটা দেখা ভীষণ জরুরি।
—কীসের ছবি? 
—দেওয়ালের গায়ে খোদাই করা একটা ছবি। তবে কি আমি ভুল করছি? কিন্তু ছিল তো বটেই … আমার এতবড় ভুল হতে পারে না।
আপন মনেই বিড়বিড় করতে লাগল রাকিব। সেই সঙ্গে হন্যে হয়ে খুঁজতে লাগল ঘরময়। একসময় হতাশ হয়ে বসে পড়ল একটা পাথরের ওপর।
হীরুদা বলল — তুমি ঠিক কোন ছবি খুঁজছো, একটু বলবে আমাকে?
—একটা প্রাকৃতিক দৃশ্য। কয়েকটি গাছগাছালি, সাথে আরও কিছু ছিল।
—আমি তোমাকে সাহায্য করতে পারি। এসো আমার সাথে।

হীরুদা ওদের পথ দিয়েই দেখিয়ে অন্য একটা ঘরে নিয়ে এল। দেওয়ালের ওপর টর্চের আলো ফেলে বলল— এই ঘরে অনেক গুলো খোদাই করা চিত্র রয়েছে, দ্যাখো তো এর মধ্যে তোমার কাজের ছবি পাও কিনা।
রাকিব খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগল। বেশ কিছুটা সময় নিল। হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে বলে উঠল — ওহ্, ভাবাই যায় না, কী অসাধারণ ব্রিলিয়ান্ট ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার সাহেব! এবার জট খুললেও খুলতে পারে।
হীরুদা ও শুভ্রাজিতা কিছুই বুঝতে না পেরে অবাক চোখে তাকিয়ে রইল ওর মুখের দিকে। 
রাকিব বলল— ছবিগুলো তোমরা ভাল করে দ্যাখো। কিছু বুঝতে পারছো?
দুজনেই মাথা নেড়ে বলল — না। 
রাকিব বলল — প্রথমে আমিও কিছুই বুঝতে পারিনি। এখন বুঝতে পারছি, এর মধ্যেই অনেক সূত্র লুকিয়ে আছে। এই সব দেওয়াল চিত্র আসলে গোপন কিছুর সঙ্কেত। 
শুভ্রাজিতা বলল — আপনার মাথায় এসব এল কীভাবে?
—ঘটনার সাথে চলতে চলতেই। তবে এখনও কোনো কিছুই পরিস্কার নয়। 
—আপনি বলছিলেন ত্রিনয়ণ রহস্য কিছুটা বুঝতে পেরেছেন। এই ছবির সঙ্গে তার কী কোনও সম্পর্ক আছে?
—হয়তো আছে। সূত্র গুলো এমন ভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, একসাথে করা সহজ কাজ নয়। তবে আমিও হাল ছাড়ার পাত্র নই। শেষ দেখেই ছাড়ব।
কথা বলার সাথ সাথেই কাগজে নোট করে যাচ্ছিল রাকিব।
হীরুদা বলল — যা করার তাড়াতাড়ি করো। এখানে বেশিক্ষণ থাকা ঠিক হবে না।

হীরুদার আশঙ্কা সত্য হয়ে গেল। একটু পরেই এক অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে গেল। তিনটে মুখ ঢাকা লোক হুড়মুড় করে ঢুকে পড়ল ঘরের মধ্যে। নিমেষের মধ্যে ওরা হীরুদাকে চ্যাংদোলা করে তুলে নিয়ে গেল। ঘটনাটি এত দ্রুত আর আকস্মিক ভাবে ঘটে গেল যে, রাকিব ও শুভ্রাজিতা কিছুই করতে পারল না। হতভম্বের মতো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখল শুধু।  কিছুক্ষণ পর রাকিব বলল — মনে হয় ওরা পরিকল্পনা করেই এসেছিল। ইচ্ছে করলে আমাদেরকেও তুলে নিয়ে যেতে পারত। অবাক লাগছে।
শুভ্রাজিতা বলল — এখন কী হবে? এখান থেকে বেরুনোর রাস্তা আপনার জানা আছে? 
—না। আপনার ভয় করছে রাজকুমারী?
শুভ্রাজিতা হাসল — অত সহজে আমি ভয় পাই না। তাছাড়া আপনি তো আছেন আমার সাথে।
রাকিব বলল — আপনাকে যত দেখছি তত অবাক হচ্ছি। এই মুহূর্তে আমরা কতটা বিপদের মধ্যে আছি তা আপনিও ভাল করেই জানেন। সেবার হীরুদা উদ্ধার করেছিল। এবার সে রাস্তা বন্ধ। আপনাকে এখানে নিয়ে আসা আমার উচিত হয়নি। কিছু হলে …
শুভ্রাজিতা বলল — যা হবার হবে। আমি কিন্তু অন্য কথা ভাবছি রাকিব। আমরা এখানে আসব সেটা ওরা জানল কীভাবে? 
রাজকুমারীর প্রশ্নটা যে কতটা যুক্তিসঙ্গত বুঝতে অসুবিধা হল না রাকিবের। হীরুদা কিছুটা আঁচ করতে পেরেছিল। তখনই সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। রহস্যের জটিল আবর্তে পড়ে হীরুদার বড় কোন ক্ষতি হয়ে যাবে না তো?

এই মুহূর্তে ঠিক কী করা উচিত ভেবে পেল না রাকিব। কিছুটা হতাশও লাগল। কে জানে হয়তো ওর জন্যই ওদের ওপর এভাবে বিপদটা নেমে এলো। শুভ্রাজিতা শান্ত গলায় বলল — একটা কথা নিশ্চি , আমরা সঠিক পথেই চলেছি রাকিব। তা না হলে ওরা এভাবে হামলা করত না। কিন্তু ওরা হীরুদাকে তুলে নিয়ে গেল কেন? কী চায় ওরা?
রাকিব চিন্তিত মুখে বলল — মনে হয় আমাদেরকে এই ধাঁধাপুরীতে আটকে ফেলা। ওরা ভাল করেই জানে এখানে ঢোকা বা বেরুনোর পথ একমাত্র হীরুদাই জানে। হীরুদা ছাড়া আমরা অন্ধ। 
—ভয় পাচ্ছেন?
—তা একটু হচ্ছে বাকী। তবে আগের বারের মতো নয়। হয়তো আপনি সাথে আছেন তাই।
—আমি ক্ষত্রিয় বংশের মেয়ে রাকিব। যুদ্ধবিগ্রহ, রক্তপাত এসব ছোট থেকে অনেক দেখেছি। মৃত্যু ভয় সেভাবে আর পাই না।
বয়সে ছোট হলেও শুভ্রাজিতা অনেক পরিনত। রাজরক্ত বইছে ওর শরীরে। আর পাঁচটা সাধারণ মেয়ের চেয়ে ও যে আলাদা হবে সেটা ভুলেই গিয়েছিল রাকিব। অনেকটা টেনশন কম লাগছে এখন। মাথাটা একটু একটু করে খুলছে।
—আপনি ঠিকই বলেছেন রাজকুমারী। ওরা ভয় পেয়েছে, তাই মরণ কামড় দিতে চাইছে। আপাতত আমাদের এখান থেকে বেরুনোর চেষ্টা করতে হবে।

দুজনে পথের সন্ধান করতে শুরু করল। সারি সারি ঘর। কোথাও টানা বারান্দার মতো প্যাসেজ। কোথাও বিরাট হলঘর। কোথায় শুরু কোথায় শেষ বোঝার উপায় নেই। সত্যি, এ এক আশ্বর্য মায়াপুরী! একসময় দুজনেই ক্লান্ত হয়ে বসে পড়ল। শুভ্রাজিতা বলল — আসল ম্যাপটা কোথায় আছে বলে আপনার মনে হয় রাকিব?
—বুঝতে পারছি না। হীরুদার কাছেও থাকতে পারে। আপনার দাদাজির সবচেয়ে কাছের ও বিশ্বাসভাজন মানুষ ছিল হীরুদা। 
—এমনও তো হতে পারে দাদাজি নিজেই কোথাও লুকিয়ে রেখে গেছেন।
—হতেই পারে।
—আপনি তো ধীরুকাকার কাছে থাকা ম্যাপটা দেখেছেন। ওটাতে নিশ্চয়ই এখানে ঢোকা বেরুনোর কোনও সঙ্কেত ছিল।
—নিশ্চয়ই আছে। কিন্তু আমি উদ্ধার করতে পারিনি। 
—আপনি যে দেওয়াল চিত্র দেখলেন, সেসব থেকে কী বুঝলেন?
—আরও কিছু বিশ্লেষণ করতে হবে। তবেই বলা সম্ভব। 
—হুঁ, আমার ভয় হচ্ছে হীরুদাকে নিয়ে। সত্যি সত্যি যদি ম্যাপটা হীরুদার কাছে থাকে এবং সেটা দিতে অস্বীকার করে তবে ওঁকে ওরা ছাড়বে না। 
—সে আশঙ্কা আমারও হচ্ছে। কিছু একটা করা দরকার। 

দুজনেই কিছুক্ষণ চুপ করে রইল। রাকিব বুঝতে পারল, এখান থেকে দ্রুত বেরুনোটা খুবই জরুরি। নইলে অনেক অনর্থ ঘটে যেতে পারে।  হঠাৎ ক্ষীণ একটা শব্দ শুনে দুজনেই সচকিত হয়ে উঠল। শুভ্রাজিতা ফিসফিস করে বলল — কিছু শুনতে পেলেন রাকিব?
রাকিব বলল — হুঁ, পায়ের শব্দ। কেউ আসছে এদিকেই, তৈরি থাকুন।
শুভ্রাজিতা কোমর থেকে ছুরি বের করে ফেলেছে ইতিমধ্যেই। বলল — এবার আর সেই সুযোগ দেব না। একটা লড়াই অবশ্যই হবে।
রাকিব বাধা দিয়ে বলল — আগেই আক্রমণ করবেন না। যেই আসুক বন্দি বানাতে হবে। বাইরে যাবার এছাড়া বিকল্প কোনও পথ নেই।

পায়ের শব্দ একটু একটু করে জোরালো হচ্ছে। কাছাকাছি আসতেই আচমকা রাকিব তার সামনে গিয়ে জোরালো টর্চের আলোয় ঝলসে দিল তার চোখ। ডানদিক থেকে আক্রমণ করতে গিয়ে থমকে দাঁড়িয়ে পড়ল শুভ্রাজিতা। রাকিব অস্ফুট স্বরে বলে উঠল — অবিনাশ আপনি? আপনি এখানে এলেন কী করে?
অবিনাশ আলোর ঝলকানি সামলে বলল — কোনও শব্দ করবেন না কেউ। ওদের চোখে ধুলো দিয়ে কোনওরকমে এখানে এসেছি। আমার সাথে দ্রুত আসুন। নইলে কিন্তু এখানে আটকে থাকতে হবে।
*******
এই ঘনজঙ্গলে মানুষের পদচারণা হয়না বললেই চলে। এমনকি বন্য উপজাতির লোকেরাও এদিকটা মাড়ায় না। কিছুটা নিরূপায় হয়েই অদম্য সাহসে ভর করে রাকিব এখানে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মহারাজার কাছ থেকে রাইফেলটাও আনতে পারেনি, পাছে কারও সন্দেহ হয়ে যায়। সঙ্গে হাতিয়ার বলতে এক ফুটের একটা ছোরা। জীবনের চেয়েও এই মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে রহস্যভেদ। যেকোনও মূল্যে যত দ্রুত সম্ভব এই রহস্যের কিনারা করতে হবে। অনেক গুলো প্রাণ এই রহস্যের গেরোতে আটকে আছে। তাদের রক্ষা করতে হবে।
খবরটা সত্যি বলেই মনে হয়েছে রাকিবের। আবার এটা একটা ট্রাপ হতে পারে, সেই সন্দেহটাও উড়িয়ে দিতে পারছে না। সবমিলিয়ে ঝুঁকি নেওয়া ছাড়া বিকল্প কোনও পথ খুঁজে পায়নি। জঙ্গলে পা দিতেই একটা গা ছমছম করা অনুভূতি টের পেল। দিনের বেলা, তবুও মনে হল, একটা আদি অকৃত্রিম রহস্য যেন ওত পেতে আছে। চেষ্টা করেও দ্রুত হাঁটতে পারছিল না। জঙ্গল কেটে কেটে পথ বানাতে হচ্ছে। মাঝে মাঝে জামার পকেট থেকে নক্সাটা বের করে দেখে নিচ্ছিল, পথ ঠিক আছে কিনা। হঠাৎ করেই ধীরেন্দ্র প্রতাপের ম্যাপ থেকে এই জায়গার সন্ধান পেয়েছে রাকিব। তিনি তিন তিনটে স্টার চিহ্ন দিয়ে রেখেছেন এই জঙ্গলের ওপর। কেন? কী আছে এই জঙ্গলে? শ্যামলাল ও কিন্নরকেও সঙ্গে নেয়নি। ভরসা পায়নি। রাজবাড়ির আকাশে বাতাসে ষড়যন্ত্রের বিষ, কে সেটা বহন করছে বোঝা দায়।

গভীর জঙ্গলে একটা ইউরোপীয় ধাঁচের বাংলো বাড়ির অস্তিত্ব দেখে ভীষণ অবাক হল রাকিব। এই গভীর জঙ্গলে কে বানালো এরকম বাড়ি? এই সেই স্টার চিহ্ন দেওয়া এলাকা। এখানে কী এমন বিশেষত্ব আছে? রাকিব ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগল। বাড়িটা কাঠের তৈরি। বেশ উঁচু, সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হয়। সিঁড়িগুলো নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে। ভয়ে ভয়ে সাবধানে উঠতে হল রাকিবকে। ঘরগুলো ছোট হলেও এখনও মজবুত। একটা ঘরে এসে থমকে গেল রাকিব। এভাবে, লোকালয় থেকে এতদূরে, এরকম একটা খন্ডহরে কোনো মানুষের দেখা পাবে কল্পনাতেও ভাবতে পারেনি রাকিব। লোকটা যেন তার অপেক্ষাতেই বসে ছিলেন।
—আসুন, আসুন, রাকিব। আমি জানতাম একদিন খুঁজতে খুঁজতে আপনি এখানে এসে পৌছুবেন। বসুন।নিঃশব্দে সামনের চেয়ারে বসল রাকিব।
লোকটা বললেন — আপনি দারুন কাজ করেছেন। আমি সব খবর পাই। এই রহস্যের সঙ্গে আমারও একটা সম্পর্ক আছে, আপনি সেটা ভাল করেই জানেন। কিন্তু সরাসরি এর মধ্যে ঢোকা আর আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে আড়ালে থেকেই আমি আপনাকে সাহায্য করতে পারি। পাতালপুরীর দেওয়াল চিত্র থেকে কিছু উদ্ধার করতে পারলেন?
—হ্যাঁ, কিছুটা তো পেয়েছি। আরও কতকগুলো নতুন প্রশ্ন মনে ভিড় করছে।
—কী প্রশ্ন?
—হীরুদাকে ওরা তুলে নিয়ে গেছে। কিন্তু কেন? হীরুদার কাছে কী আসল ম্যাপটা আছে?
সামনের লোকটা গম্ভীর মুখে বললেন— হীরু যে অনেক কিছু জানে এই ধারণা ওদের মনে আজকের নয়। নানাভাবে ভয়ও দেখিয়েছে সেসব বের করার জন্য। এবার আর কোন রিস্ক নেয়নি। ম্যাপের ব্যাপারটা বলতে পারব না, তবে রাজবাড়ির অনেক গোপন খবর হীরু জানে। সেটাও হীরুর প্রাণের পক্ষে বিপজ্জনক।
—কী খবর? আপনি কিছু জানেন সে বিষয়ে?
—পরিস্কার নয়, ভাসা ভাসা কিছু জানি। রাজবাড়িতে এমন একজন মিশে আছে যে আসলে ব্রিটিশদের গুপ্তচর। আমার ধারণা একমাত্র হীরুই তাকে চেনে। ভয় পেয়ে সেও অপহরণ করতে পারে হীরুকে।
—এর সাথে ধীরেন্দ্র প্রতাপ বা মায়ার খুনের কোনও সম্পর্ক আছে?
—সেটা আমি জানি না। রাজবাড়িতে একটা জটিল রহস্য আবর্তিত হচ্ছে, কোথায় কোন কানেকশন আছে খালি চোখে দেখা মুস্কিল। একদিকে মহারাজার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, অন্যদিকে গুপ্তধনের লোভ, হয়তো আরও কিছু আছে যা আমরা খালি চোখে দেখতেই পাচ্ছি না।
হঠাৎ রাকিব বলে উঠল — আপনিও তো কম রহস্যময় চরিত্র নন! আপনি কেন আমাকে সাহায্য করতে চাইছেন সেটা কিন্তু আমি জানি। ছদ্মবেশের আড়ালে থাকলেও আমি আপনাকে চিনে ফেলেছি।
প্রথমে একটু থতমত খেলেন ভদ্রলোক । তারপর হেসে বললেন — আপনার বুদ্ধিমত্তা নিয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই। আমরা দুজন দুজনার পরিপূরক হতে পারি। আমি জানি আপনি চান, মহারাজা বীরেন্দ্র প্রতাপের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা চক্রান্তের জাল ছিন্ন করা এবং ধীরেন্দ্র প্রতাপ ও মায়ার খুনিকে ধরা, কী তাই তো?
—ঠিক তাই। আমি মহারাজকে কথা দিয়েছি।
—এবার বলুন কোথা থেকে শুরু করা যায়? রহস্যভেদ অত সহজ কাজ নয়। এলোমেলো ভাবে এগিয়ে কোন লাভ হবে না। ঘুরে ঘুরে কিছু তথ্য পাওয়া এক জিনিস আর রহস্যের সমাধান করা আর এক জিনিস। শেষটা পুরো মগজের অঙ্ক, দুইয়ে দুইয়ে চার করতে হবে।

রাকিব মনে মনে লোকটার বুদ্ধিমত্তার তারিফ না করে পারল না। সত্যি তো, এই রহস্যের জট খুলতে গেলে আরও মগজ খাটাতে হবে। সূত্রগুলো আরও পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে বিশ্লেষণ করতে হবে। একা হচ্ছিল না, কোথায় যেন চিন্তার ফাঁক থেকে যাচ্ছিল। একজন সঙ্গী পেয়ে খুশি হল রাকিব। ( চলবে )

সুজিত বসাক। পশ্চিমবঙ্গ