অটোয়া, সোমবার ২৩ জুন, ২০২৫
মা গো ওরা বলে - মোঃ আইনাল হক

মা গো, ওরা বলে আজ নাকি বিজয় দিবস! 
আবালবৃদ্ধবনিতার 
বিজয়ের আনন্দে মেতে উঠার দিন,
স্বাধীনতা অর্জনের নাকি 
আটচল্লিশ বছর পূর্ণ হল!

কিন্তু! এটা কিসের বিজয় মা?
যেখানে আমরা তিন বেলা
পেট পুরে খেতে পাই না,
কৃষক ফসলের নায্য দাম পায় না,
মানুষ মুখ খুলে মনের কথা বলতে পারে না।
ত্রিশ লক্ষ রক্ত মাখা শহীদরা কী
এমন স্বাধীনতা চেয়েছিলেন, মা?

আচ্ছা মা; কিছু কিছু মানুষ এই যে
স্বাধীনতার কথা বলে,
অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলে,
সাম্যের কথা বলে, ন্যায় বিচারের কথা বলে 
তা কি সর্বসাধারণের জন্য,
ঐ মাঠে ফসল ফলায় যে কৃষক, তার জন্য? 
কারখানায় কর্মরত যে কৃষক, তার জন্য? 
নিরাপত্তাহীন সংখ্যালঘু যে সম্প্রদায়, তার জন্য?
নাগরিক অধিকার বঞ্চিত যে জনগণ তার জন্য?

তাহলে; সাগর, রুনি, ফেলানী, বিশ্বজিৎ 
তনু, নুসরাত, আবরারদের বেলায়
এতো কালক্ষেপণ কেন?

তবে কি; স্বাধীনতা কেবলই উপরতলায় 
বসবাসরত ঐ গুটিকতক মুখোশধারীর জন্য?
অথবা, পর্দার আড়ালে উৎপেতে থাকা 
কিছু সংখ্যক সুবিধাবাদীর?
চুপ করে কেন, জবাব দাও মা?

এই তো গত বছর; কত বায়না ধরে,
কান্না-কাটি করে, সেই তো দিলে
পাঁচ টাকার একটা কয়েন মাত্র। 
রঙিন সাজে কত্ত মানুষ এলো
উৎসব উদযাপন করে গেল;
তাদের পোশাকে লাল-সবুজের ছড়াছড়ি, 
বিজয় মেলা ঠিক যেন 
এক টুকরো বাংলাদেশী ঘুড়ি।

তোমার দেয়া কয়েন টা বুক পকেটে চেপে
মেলার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ঘুরে
কত জনের খেলনা কেনা দেখেছি, 
কত রকমারি খাবারের দোকান চিনেছি, 
কত জনের আনন্দ উপভোগ দেখেছি, 
কিন্তু অংশ গ্রহণ করতে পারি নি, মা!
বিশ্বাস কর মা! মানুষের ঢল নামা মেলায়  
তোমার ছেলের দিকে কেউ ফিরেও তাকায় নি।

আর তোমাকে একটা কথা বলি 
আজকাল, পাঁচ টাকা দিয়ে কিচ্ছু হয় না মা?  
তুমি দেখনা; যে ভূখন্ডে রাতারাতি পেয়াজের দাম
সাত গুন বাড়ে, নুনের কেজি বিক্রি হয় একশ'য়।
একখন্ড মেডিকেল বই পঁচাশি হাজার,
একজোড়া বালিশ বারো হাজারে প্রায়। 
আর সেখানে! তুমি পড়ে আছো মাত্র পাঁচে। 
আচ্ছা মা! আর কত আটচল্লিশ পেরুলে
মহান মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক, স্বাধীন বাংলার
স্বপ্নদ্রষ্টা, বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু 
শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা পাব?
বাংলার মুক্ত বাতাসে স্বাধীনতার স্বাদ নিব?
শহীদের রক্তের ঋণ শোধ দিব?
শুধু একটিবার বলে দাও মা,,,,,,,,,,,,,

মোঃ আইনাল হক
মান্দা-নওগাঁ