ছল - মুহাম্মাদ শোয়াইব
পাহাড়ের বুকে পা চালাতেই আমি যেনো সুচের মতো
বিঁধে যাচ্ছি তুলোয় ভরা নরম বালিশে,
এদিকে মাটির পৃথিবী আমাকে আর নিতে চাচ্ছে না।
এক অদৃশ্য ছাতা অথবা কাফনের এক প্রস্থ কাপড়
কেউ ঝুলিয়ে দিয়েছে মাথার উপর
আমি হাজার ভিজেও বৃষ্টিতে ভিজতে পারছি না৷
ওহ! এক কী ভীষণ প্রকান্ড প্রস্থর এক তৃষ্ণা নিয়ে
আমি জল চেয়ে ফিরেছি নদীর পায়ে কূপের মুখে
আর মানুষের দুয়ারে দুয়ারে,
বেলাশেষে ফিরে গিয়েছি সমুদ্রের বুকে
তৃষ্ণা লোনা জলে আর ক্ষুধা মিটিয়ে ছেড়েছি
ভেজা নরম বালুকা দিয়ে৷
অথচ একদিন সূর্য দেখার আগেই ঘুম থেকে উঠে
কালো চাদর জড়িয়ে
তিন চুমুক কফি খেয়ে ঘর হতে বেরিয়ে পড়েছিলাম,
বলেছিলাম- পৃথিবীকে জয় করতে পারলেই ঘরে ফিরবো!
বরং আজকের দিনে পৃথিবী আমাকে জয় করে নিলো,
একেকটা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ একেকটা শহর
শিরা-ধমনী হয়ে গেলো যাতায়াত
আর ত্বকের নাম দিলো সীমানা৷
ফেরার সবকটি পথ মুছে গেলো
আর আমাকে জানানো হলো এখন থেকে
এই মাংসের শরীরই আমার ঘর৷
জ্ঞানীরা মুখ ফিরিয়ে নেয় চুপ থাকে সাধু-ঋষি-মুনি
এরা তিরস্কার করে অভিষাপ দেয়
তবু কেউ কভু বলতে পারে না আমার অথবা রোগের
প্রকৃত নাম৷
আমার ব্যস্ত হৃদয় ঘোলা মন আর দুর্বল চিত্ত নিয়ে
আমি খেলা করে আসছি শিশুকাল থেকে
শরীরের ছল আমি এখনো বুঝে উঠি না৷
হাত পা রেখে দিলে কতদূর পর মনে হয় ওসব কখনো ছিলোই না,
কখন নিঃশ্বাস নেবে আর কখন দেবে মেলাতে পারে না-
সুর ছিড়ে যায় তাল কেটে যায় ফুসফুস গুলিয়ে থাকে।
চোখের পাতা নামিয়ে নিলেই মনে হয়,
আমি একটা সূর্যহীন কালো মহাকাশে ডুবছি অথবা ভাসছি,
শরীর বেহদ্দ ভেঙ্গে আসে ঘুমে
তবুও আমার ঘুমুতে ভীষণ ভয়৷
মুহাম্মাদ শোয়াইব
মিউনিখ, জার্মানি
-
ছড়া ও কবিতা
-
20-11-2020
-
-