ঈশ্বর থেকে দূরে - মুতাকাব্বির মাসুদ
চলো পালাই
হিমালয়ে ঘর বানাবো
হিমাদ্রির বুকে-শিশিরের চোখে
যেখানে শ্রান্ত আকাশ ভালবাসার টানে
আনত চোখে হিমালয়ের শর্তহীন বরফ
শরীরে মৃত্যুর মতো মিশে যায়
লাওয়ারিশ ঝিঁঝিঁর ডানায় অন্তিম সংগীতের
ললিত লহরি
আকাশ তবুও মৃত্তিকার অমীমাংসিত ধূলোর শরীরে চাঁদের আলোয় নিজেকে সাজায়
দিনের শেষে পশ্চিমে রক্তপিণ্ডের আড়ালে
হেলান দিয়ে উন্নিদ্র রাতের কুলোয়
আকাশ চোখ বুজে শুয়ে থাকে-
বুকের পাঁজরে জমানো অন্যরকম প্রণয়
সঙ্গী তার কষ্টের ধ্রুপদ হাওয়ার ভায়োলিন
শিথানে তার মাটির বালিশ
রোদের সামিয়ানা-ঘাসের বিছানা
চলো- চলে যাই- হারিয়ে যাই
যোজনগন্ধা যৌবনের
হারানো সে-ই তন্বী প্রজাপতির
নীলাম্বরী আঁচলে
আমি দেখেছি একজোড়া বনসারস
ঘর তুলেছে
স্পর্ধিত চিত্তে
হিমালয়ের বরফোষ্ণ বুকে
উড়াল যখন শিখেছে সারস
মুক্ত ডানায় উড়াল তো দেবেই
দিগন্তে মিশে যাবে একদিন
আকাশের শরীরে চুক্তি বিহীন
মেঘ যেমন মিশে যায়
তেমনি আমিও তোমার মধ্যবয়সী
ঘাসঘাস শরীরে সারস হয়ে
মৃত্যুহীন মৃত্যুর মতো হারিয়ে যেতে চাই
পিঙ্গল আকাশ- হলুদ পাখি
বুকের ভেতর সোনালি শস্যের ঢেউ তুলে
আমার চোখের কবোষ্ণ জল
বরফ শীতল-লাশ হয়ে মৃত্তিকায় ঝরে
ফোঁটায় ফোঁটায়
একদা বিধবা রোদের দোপাট্টায়
বিছিয়েছিলে-দোপাটিতে সাজিয়েছিলে
অনিরুদ্ধ সুবিমল- অনঘ প্রেমের দোমতি
স্বপ্ন-কল্পনার দোচালায়
তুমি ছিলে - আমি ছিলাম
অবিনাশী চিরপ্রেমের সায়েল
তোমার আকাশ কাঁপানো রোনাজারি
বোশেখের শিলার মতো কম্পিত হয়
আমার নিরক্ত লাল মাংসের ভেতর
বুকের ছাউনিতে মেরুন পিঁপড়ের কামড়
জানান দেয় অনুক্ষণ
জীবিত পিঁপড়েরা-ই তো কামড় দিতে জানে
সকাল-বিকাল কিংবা সন্ধ্যা-রাতে
চলো পালাই ঈশ্বর থেকে দূরে
মানুষ থেকে দূরে
সেখানে মিশে যাবো তারার মতো
তুমি আর আমি
সাদা সাদা মেঘের শরীরে!
মুতাকাব্বির মাসুদ
শ্রীমঙ্গল, বাংলাদেশ
-
ছড়া ও কবিতা
-
03-10-2020
-
-