অটোয়া, সোমবার ২৩ জুন, ২০২৫
অনিন্দিতা ফিরে এসো - মানস চক্রবর্ত্তী

নিন্দিতা ফিরে এসো 
বসন্ত প্রায় শেষ হতে চলল 
মানো আরো একটা বছর 
আমাদের সুনন্দার বিয়ে হয়ে গেল 
আনিসুরের সঙ্গে।
মুসলমান আপত্তিটা টিকল না। 

তুমি প্রায়ই বলতে -  
শীতের রাতে গাঁদা সুন্দরী যুবতীর মতো।
অথচ তোমাকে দেখাতে পারলাম না আমার গাঁদার বাগানটা 
চাপা, ঝুমকো, টিরা, রক্তগাঁদা সবই ছিল।

কচি হরিণ শিশুর মতো রোদ খেলা করে   আমার ছাদে 
যুবতীর মতো নরম শরীর নিয়ে 
জ্যোৎস্না আসে আমার বেলকনিতে। 
জোনাকি, বৃষ্টি, গোধূলি, বসন্ত বাতাস 
মাঝরাতে স্ত্রীকে ঘুম থেকে তুলে 
চুমু খাওয়ার মতো ছুঁয়ে দিয়ে যায় আমাকে।
বিশ্বাস করো অনিন্দিতা,  
আমার রোমান্স আসে না। 

তোমাকে আমি কত ভালোবেসেছিলাম 
তা তো আর বোঝানো গেলো না, 
কাল তপুদার বাড়ি গিয়েছিলাম 
ওর মেয়ের গানের দিদিমণি সুখলতা 
হারমোনিয়াম বাজিয়ে শুনাল- "ঘরেতে ভ্রমর এল গুণগুনিয়ে" 
কোনো মেয়ের মুখে রবীন্দ্রসঙ্গীত অনেকদিন বাদে শুনলাম  
তাই একটু কেমন যেন হয়ে গিয়েছিলাম  
ব্যস ঐ টুকুই  
তারপর হাত জোড় করে ভদ্র ছেলের মতোহাসিমুখে আবার রাস্তায়।

ট্রাফিক জ্যামের মতো জীবন মাঝে মাঝে থামতে চায় 
যেমন আজ সন্ধ্যায় চেয়েছিল সুখলতার কাছে 
বই আর বউ এর প্রতি পুরুষের একটা আকষর্ণ চিরকালের 
সাহিত্য সম্মলনে সুন্দরীদের সুললিত কণ্ঠস্বর 
আমি প্রায়ই শুনি 
আর দেখি 
কলেজে পড়তে আসা বাহারী শাড়ি পরা সব মেয়েদের।
কিন্তু সবই আজ হট্টগোল বলে মনে হয়  

আমার এই যে নিঝুম বসে থাকা  
অলস শুয়ে থাকা আর 
সিগারেটের ধোঁয়ার কুণ্ডলীর দিকে নিরব চেয়ে থাকা থেকে 
আমাকে মুক্তি দাও অনিন্দিতা 
তুমি ফিরে এসো।
ফিরে এসো।

মানস চক্রবর্ত্তী 
বাঁকুড়া (সাহাপুর), পশ্চিমবঙ্গ