পার্থ সারথি চক্রবর্তী’র কবিতা
জানালা আর আমি
বেশ কিছুদিন ধরে আমার ঘরের জানালাদুটিকে-
আমার পৃথিবী মনে হয়
মনে হয় না; আসলেই আমার পৃথিবী
একজন উত্তরে আর আরেকজন পূবে
উত্তরের জন বছরভর ভালোই
শুধু শীতে আমার হাড় কাঁপায়।
আর পূবের জন সকালবিকাল আমায়-
স্নান করায় মিঠে আলোয় ভরে।
জানালাদুটির কাছে আমার অনেক ঋণ
শোধ করা যাবে না কিছুতেই
কিছু ঋণ শুধু ভালোবাসার।
জানালা দিয়ে আমি আকাশ দেখি
দেখি মেঘ, বৃষ্টি, জোৎস্না, চাঁদ, পাখি
দূরে কিছু বাড়ি, তার পরেই আকাশের সীমানা
সূর্যটাকেও দেখি ওই দিকেই অস্ত যায়
হয়তো তারও দেখা পাব, কাছে গেলে
জানালায় দাড়িয়ে ভালোবাসা
কখনো কাছে যাওয়া যায় না
আমি দূর থেকেই ভালোবাসি,
কাছে যাই না
আমি আর আমার জানালা যেন
সমান্তরাল
বাতাস
আগের মতো বাতাস আর পাইনা এখন
এক বুক বাতাস নিয়ে চলে যেতাম কত অচেনা পথ
ক্লান্ত, ঝরো কাক হয়ে যখন ফিরতাম
আমার শরীর মুছিয়ে দিত সে সাদরে
দাবদাহে ক্লিষ্ট প্রান্তরের ধূসর স্মৃতি
নিমেষে উড়িয়ে নিয়ে যেত দূরে বহুদূরে
পূবালী বাতাস সকালকে করে তুলতো মায়াবী
তার দখিনা দোসর জুড়াতো প্রাণের জ্বালা
আর আশৈশব দহন পীড়া কমাতো সে
এক ফুঁয়ে কি সহজে, অনায়াসে।
এমন বাতাস কেন পাইনা আর
এক লহমায় ভাসিয়ে দেবে সব অবিশ্বাস
মনের চোরাবালি, সব দীর্ঘশ্বাস।
বইছে না কেন এমন এক বাতাস
যা নিথর দেহেও জাগাবে এক লড়াকু বিশ্বাস
যুদ্ধবিধ্বস্ত শহরেও আনবে নতুন আশ্বাস
পার্থ সারথি চক্রবর্তী
কোচবিহার, পশ্চিমবঙ্গ
-
ছড়া ও কবিতা
-
22-07-2020
-
-