রঙের কড়চা - এ. এইচ. এম. আওরঙ্গজেব জুয়েল
মনে আর রঙ লাই কো বাবু, রঙ লাই মনে
ধইনচার মতো খাড়াইয়া থাকি;
বাতাস যে দিকে লয় হেইখানে ছুটি।
বাতাসের তোড়ে যহন ধানের সবুজ পাতা লড়ে
মনের মোদদে কি জানি হয়,
কইতাম লাই পারি।
হামাদের মনে রঙের জোয়ার বইছিলো এককালে
যহন গ্যারামের মানুষ কাজের ফাঁকে
গলা ছাইড়া বাউলা গানে
মাঠে মাঠে ছড়াইয়া দিতো সুর আর তানে।
উইঠান থাইকা গরুর হামবা শবদে
য্যামন ছুইটা আইসতো গরুর পানা
হামাদেরও মনে ত্যামনি কইরা
মনে পইড়া যাইতো
হামার মায়ের হেই স্নেহমাখা ডাক-
বাজান আয় খাইয়া যা, তোর পছনদের
পানতা আর লাল লঙকা, দেহিস কত মজা!
হেই মা আর লাই, মা হামার চইলা গ্যাছে।
আর কেউ ডাহেনা, আয় বাজান খাইয়া যা।
কত আকাল আর কত ব্যথায় ডুইবা আছি
মা ছাড়া একলা হামি কীসের আশে বাঁচি?
মা যাবার পর কত কতবার হেই ধইনচা আর
ধানের গাছে খেলা করা বাতাসের সনে
কত কতা কইছি, কত আপন মনে।
জড়াইয়া ধইরা মনের কতা কইবার চাইছি
এ্যাহন দেহি, হে হামার সনে কতা কয় না
আলগোছে জিগাইছি, ক্যান, কতা কওনা ক্যান?
হের জবাব পাই লাই, তয় বুজছি হেও বুঝি
হামার মতো মা হারা এক অবুজ পাখি;
মনে আর রঙ লাই গো বাবু, মনে আর রঙ লাই।
শরীয়তপুর, বাংলাদেশ।
-
ছড়া ও কবিতা
-
10-07-2020
-
-