অটোয়া, সোমবার ২৩ জুন, ২০২৫
লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল-এর কবিতা

ঢেউ ভাঙতে ভাঙতে
বুকে বাতাস ভরতে ভরতে বসে পড়ি মাটিতেই
সূর্য নিতে নিতে বহুদূর খুঁজে যাই ভোররাত
ঝিরঝিরে টিনের চালার চারপাশ খাঁ খাঁ
দিন রাত না মেনেই চেনাপথ পাল্টে যায়
ফুল পাখি আর মাছ চলে যায় শ্মশান যাত্রায়
আমার ভয় করে-
ধোঁয়ার জ্যোৎস্নায় শীতল ঠোঁট - চাঁদ ডুবে যায় পৃথিবীর

আমি কার কাছে শোব?

অস্থিরতা জড়ানো দিনান্তে  নক্ষত্র ঝরে পড়ে
ঝরাপাতা আর খসা বাকলের গায়ে মরা রোদের ফ্যাকাসে চুম্বন
বুকের স্পন্দন থেকে চুঁইয়ে আসে বাজনার আওয়াজ
বরুণের নির্জন বিছানা, জগন্নাথদার আম্লিক সকাল
গনেশের হাড়ের ঘুণ আর বউয়ের লাথিলাগা নিখিলের অণ্ডকোশ

  প্রতিটি ঢেউ ভাঙতে ভাঙতে আমি পবিত্র হয়ে উঠি-

নীল জার্নাল
পাতার শরীরে মিশ্র নাগিনী

যতটা যুগান্তর বুকে নিয়ে
কাঁপছিল হৃদয়, পাখি আসবার পর
আজকের জার্নালে অফুরন্ত ঢেউ
সমবেত কোরাসের মাঝে একটি পদ্ম

দধীচি হবার মাটি থেকে
শূন্য ছুঁয়ে থাকা দূরত্বে আমি, নীল

সুর ও বিছানায় আমের বোল
আবার উত্তাপ বাড়ে মাটির উঠোনে
কালো দেহের জল কালো হয়ে যায়
সেই স্বরে ইথার আর বাস্পময় চাঁদ
   মরতে থাকে প্রজাপতির বারান্দা--

প্রাণ থাকে প্রাণের ভিতর
খনও অতীত সুরের পথ দিয়ে উঠে আসে হাওয়া
সেও জানে না  নিরাময় কাকে বলে-
সেই কাঁপনে অর্জুন গাছের নিচে দাঁড়াই
খুলে যায় সহজ পাঠের অমৃত সুবাস
ছোট্ট খোকাটি হামা দিতে দিতে প্রবেশ করে
অনবরত ধাক্কা খাওয়া মাটির কাছে,
বুকে আগাছা আর ঘিনঘিনে নিশ্বাসের জঙ্গলে
দিশেহারা  প্রাণের কোন অর্থ জানা নেই-
এগিয়ে যায় রাশি রাশি খয়েরি পাতা
ক্ষয়লাগা সীমারেখায় নেমে আসে নীলাকাশ
রাস্তা বদলেও হয়তো প্রাণ থাকে প্রাণের ভিতর 

সেই দূরত্ব আত্মীয়তায় সুন্দর;  না অতীত না ভবিষ্যৎ
উজ্জ্বল আমার গোত্র নিয়ে

লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল,
বরদা,  মোহাড়,
পশ্চিম মেদিনীপুর