অটোয়া, সোমবার ২৩ জুন, ২০২৫
সৌমিত্র শীল-এর দু’টি কবিতা

লাঙল ও ঘুঙুর
খনো দেখেছো কৃষকের লাঙল?
তাকে ছোঁয়া তো দূরের কথা!
দেখবে খুব সহজ একটা জিনিস
কিন্তু এর ভেতর ঠাসা ধনুকভাঙা পণ!  
অফুরন্ত শক্তি!
কৃষকের সংস্পর্শে আরও সাহসী হয়ে ওঠে
হার না মানা মানসিকতায় দীপ্ত দৃষ্টিভঙ্গি;
চাওয়া পাওয়ার ঝুলিটা শূন্য থাকলেও 
তাকে কখনো ছেড়ে দেয়না কৃষক
বরং খারাপ সময়েও তার স্পর্শে স্বপ্ন দেখে
অপেক্ষা করে সুদিনের আগমনীর
কোটরগত চোখ একসময় ঝাপসা হয়ে আসে
অর্ধাহারে শরীরও গা এলিয়ে দেয়
কিন্তু ছাড়েনা লাঙল।

শুনেছো নর্তকীর ঘুঙুরের ললিতবাণী নিষিদ্ধপাড়ায়?
একটা সাধারণ ঘুঙুর
কিন্তু এর ধ্বনিতে আপাতঃ সম্মোহন জাগলেও এর আড়ালে আছে কান্না
আছে যুগান্তরের নিষ্ফল আবেদন
নিঃশব্দ বিপ্লবের আর্তি
বধির সভ্যতা যা শুনতে পায়না।

নগ্নপথে
ন্ধকার গায়ে মেখে দিব্যি চলেছি
চাঁদ লজ্জায় সাথ দেয়নি
উল্টে মেঘের আড়ালে লুকিয়েছে
ইতিহাসের খুনে চরিত্রগুলোর মতো।
হঠাৎ পথের স্পন্দন বেড়ে গেলো
কারও পথচলার শব্দ কানে ভেসে আসছে 
দেখি "শোলোক বলা মা" কাজলাদিদির
খোঁজে পথে নেমেছে
কে দেবে হদিশ?
মুখে সবার কুলুপ আঁটা
আমিও মুখ লুকিয়ে স্থান পরিত্যাগ করি
নিরাপদ দূরত্বে পৌঁছে দেখি 
পথ ভগ্নাবস্থায় হয়ে পড়ে আছে 
খালি চোখে এ দৃশ্য দেখা যায়না
নির্বাক পথ আমার চোখে আঙুল দিয়ে চিত্রনাট্য বোঝাতে চায়
এই নিষ্ফল আবেদনটুকু অন্ততঃ বুঝি

সৌমিত্র শীল। উত্তর দিনাজপুর