অটোয়া, সোমবার ২৩ জুন, ২০২৫
নীলকন্ঠ নাবিক - সিরাজুল ইসলাম

ষ্টের চোরাবালিতে
আকন্ঠ আটকে আছি আশৈশব।

বুদ্বুদ ওঠা যাতনাগুলো
ডানা ঝাপ্টায় যেন ঝড়োকাক!
ভালোবাসার পেয়ালায় চুমুক দিয়ে
নীলকন্ঠ নাবিক আমি কষ্ট সাগরে।

হতাশা আর প্রবঞ্চনায় আষ্টেপিষ্টে
বিলিন হয়ে যায় উত্তুরে জনপদ!
ফাটা চৌচির চৈত্রের দুপুরে
আমি খুঁজে ফিরি সোঁদামাটির গন্ধ!

দূর বহুদূরের অজানা অখ্যাত কোন এক গ্রাম-
পথের বাঁকে ঘিরে আছে ঝুরি নামানো বটের ছায়া!
কিশোরীর পায়ের ঘুঙুর হয়ে,
শ্রাবনের বৃষ্টি নুপুর বাজে টিনের চালে!

ছোটখাল ভরে আছে ট্যাংরা-চাপিলা-কৈ আর পুঁটি,
কৃষাণী-বৌয়ের কাঁঠের খড়িতে, মাটির হাঁড়িতে-
টগবগিয়ে ফোটে মোটা চাল, মশুরের ডাল!

অথবা
সকালের সোনারোদে তুলে দেবে শানকি ভরে,
পান্তাভাতে কাঁচালঙ্কা ঝাঁঝালো পেঁয়াজে মাখা কুমড়োের বড়া! আহা!

অলস দুপুরে তমালের ডালে
যেন কোন সুর-দরিয়ায় ভেসে যায় ঘুঘু আর হরিয়াল-
শরতের খোলা আসমানে মেঘের আঁকিবুকি !

তালগাছের মাথায় দোলা দুরন্ত বাতাস,
সাঁঝের আঁধারে ঝিঁঝিঁপোকা ব্যাঙের ডাক-
বন থেকে ভেসে আসা শেয়ালের আহাজারি,
আহা! কী যে শান্তির পেলবতা মাখা।
মাটির প্রদীপে সন্ধ্যাআরতীতে জ্বলে আজও,
মায়ের নাকে মটরদানার সোনার নাকফুল!

ভারসাম্যের নিক্তিকাঁটায়
পেন্ডুলামেরর মত দোল খেয়ে যায় স্বপ্নগুলো!
নাটাবনের চোরাকাঁটায়
জাপ্টে ধরা সোনালী কৈশর!

সিরাজুল ইসলাম। পাবনা, বাংলাদেশ