অটোয়া, সোমবার ২৩ জুন, ২০২৫
নীল সমুদ্রে অলৌকিক জলযান - সুনির্মল বসু

খানে আকাশ সমুদ্রের উপর যেন ঝুঁকে পড়েছে,
এখানে বইছে হিমশীতল বাতাস, দূরে ঝাউবন, বালিয়াড়ি, সমুদ্রের উপর উড়ে যাচ্ছে অ্যালবার্টস পাখি, আকাশে মায়াময় জ্যোৎসনা,
স্বপ্নময় নীল সমুদ্রের উপর দিয়ে ভেসে যায় সওদাগরের নৌকা, অনন্ত উতরোল জলরাশি, গভীর নীরবতা এই সময়ের সাক্ষী থেকে যায়, জলে ভাসে শুশুক, উড়ুক্কু মাছ,
সকাল দুপুর পেরিয়ে রাত্রি আসে, জলে মায়াময় জ্যোৎসনা ভেসে যায়, সওদাগরের স্মৃতিতে রাজকন্যার মুখের ছবি ভাসে, এত সুন্দর মায়াময় মুখ কি ভোলা যায়, মনে মনে বলে, তুমি মুখ ফিরিয়ে নিলে, আমি কার কাছে যাবো, কেমন করে তোমাকে হারাবো,
রাজকন্যা হেসে বলে, তুমি সব সময় ঐশ্বর্য্যের পেছনে ছোটো, আমার জন্য তোমার অবকাশ কই,
ভুল বুঝনা সই, আমি ভালবাসার সওদাগর, আমার নৌকা ভর্তি কিনতে চাই প্রেম, এটাই আমার নিকষিত হেম,
সমুদ্র যাত্রায় তবে গেলে কেন,
আলো কিনবো, আকাশ কিনবো, ভালোবাসা কিনবো, তাই,
ভালোবাসা কি খোলামকুচি,
টাকা-পয়সার করি নিকুচি,
আমি উচ্চতায় যাবো,
কি সেটা,
একটাই তো জীবন,
হ্যাঁ, একটাই মরন,
ভালোবেসে যাবো,
কাকে,
এই আকাশ, এই আলো, এই সবুজ গাছপালা, এই নদী, এই ঢেউখেলানো নীল সমুদ্র, আর তোমাকে,
কবে ফিরবে,
যখন বলবে,
আমার জন্য কি আনবে,
ভালোবাসার মণিমুক্তো,
আর,
শুধু ভালোবাসা,
সেটুকুই আশা,
ভোরের ঠান্ডা বাতাস। উদাস ভোর। পাখি ডাকা সকাল।
নৌকো ফেরে। তটভূমি ছোঁয়।
রাজকন্যা তীরে দাঁড়িয়ে। মুখে স্মিত হাসি।
বলে, তোমার জন্য ঠায় দাঁড়িয়ে আছি,
জানি,
কি করে,
ভালোবাসার জোরে,
এত বিশ্বাস,
হ্যাঁ, বিশ্বাস না থাকলে ভালোবাসা মেলে না,
কি পেলে,
আকাশের কাছে উদারতা, আলোর কাছে গতি, দূরের পাহাড়ের কাছে মাথা তোলার শিক্ষা, সমুদ্রের কাছে জীবনের সুর,
আর, আমার কাছে,
বিশ্বাস আর ভালোবাসা,
এটুকুই আমার বেঁচে থাকার আশা,
সকাল এলো। স্বপ্নময় সকাল। গাছে গাছে ফুল ফুটল। ভোরের পাখি গান গাইলো।
সওদাগর রাজকন্যার হাত ধরলেন। ওরা স্বপ্নের অলৌকিক জলযানে উঠে বসলো।
নীল সমুদ্র, উদাসী বাতাস, প্রভাতী তরুণ আলো ওদের ভালোবাসার সাক্ষী হয়ে রইলো।

সুনির্মল বসু । পশ্চিমবঙ্গ, ভারত

কবি সুনির্মল বসুর জন্ম ১৯৫০ সালের ৩রা নভেম্বর কলকাতায়। পিতা সুবোধ কুমার বসু ও মাতা শ্রীমতি গীতা রানী বসু। শিক্ষাগত যোগ্যতা, এম,এ,বি,এবং। অবসরপ্রাপ্ত উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক। প্রকাশিত গ্রন্থ, শিকড়ে বৃষ্টির শব্দ ও ভালোবাসার কবিতা মালা।
যৌথ গ্রন্থ, পাঁচে পঞ্চবান, চেতক ও পানকৌড়ি। ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন পত্র পত্রিকার নিয়মিত লেখক তিনি।